আগামী ২৩(জুলাই) তারিখ চীনের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠা দিবস। মহাসমারোহে চীন তা পালন করবে। না আমি এখন চীন নিয়ে লিখছি না। লিখছি কমিউনিস্টদের নিয়ে। কিন্তু যেহেতু চীনের কমিউনিস্ট পার্টি নিয়ে লেখার সূত্রপাত তাই চীন দেশের কিছু আসবে।
আর যাইহোক... বহু অভিযোগ থাকা সত্বেও চীন বিশ্ব নেতায় পরিণত হয়েছে। ওদিকে সোভিয়েত হয়ে গেছে রাশিয়া। চীন যে কারণে এতো বড়ো একটা পাওয়ারে পরিণত হলো তার পেছনে শুধু কমিউনিজম আছে এমন না। আগে থেকেই সে দেশের ডিএনএ তে রসদ মজুত ছিলো। ইতিহাস পড়লে আমরা তাওবাদ সম্বন্ধে জানতে পারি, জানতে পারি কনফুসিয়ানস্ম। আসলে এইধরনের মতাদর্শ গুলোই চীনের সম্বল। কমিউনিজম সেগুলোকে একটা বিশেষ ফর্মে এনে তাদের উন্নতি র দিকে নিয়ে গেছে, মাও এর নিওডেমোক্র্যাসির মাধ্যমে। এখন আমরা চীন দেশের রাজনীতির বিরোধিতা করতেই পারি, আমাদের বিরুদ্ধে তারা কিছু করলেই আমাদেরও উচিত তার অপজিটে দাঁড়িয়ে ওঠা। কিন্তু তারা যে রাজনৈতিক সাফল্য পেয়েছে তা অস্বীকার করতেই পারি না।
কিন্তু আমাদের উপমহাদেশে কমিউনিজম কেন তেমন কিছুই করতে পারলো না? কারণ জানতে আমাদেরকে ইতিহাসের মধ্যে আমাদের জীবনের বা মরণের কিম্বা ধুকতে থাকার কারণ খুঁজতে হবে।
আমাদের উপমহাদেশে চীনের তাওবাদ বা কনফুসিবাদ এসবের মতো উপমহাদেশীয় মতাদর্শগুলো উপমহাদেশের মানুষের কাছাকছি আসতে পারে নি। বরং মানুষকে দূরে সরিয়ে রাখার একটা প্রচেষ্টা থেকেই গেছে। আমাদের উপমহাদেশের জ্ঞান শুধুমাত্র গুটি কয়েক মানুষের হয়ে থেকেছে। পরবর্তীতে ইসলামের সুফিবাদের প্রভাবে জ্ঞান মানুষের কাছে মানুষের মতো করে পৌঁছুতে শুরু করে, আর তখন থেকেই সমাজে বিপ্লব ঘটতে শুরু করে। কিন্তু সেই বিপ্লব কে দমন করতে, উপর থেকে দেখতে এবং ভাবতে তেমনই কিছু মতাদর্শ গড়ে তোলা শুরু হয় সেই তাদেরই ডিএনএ দ্বারা যারা জ্ঞানকে কুক্ষিগত করে রেখেছিলো এদ্দিন। ফলে সুফিবাদের মধ্যে বিভ্রান্তি আসে। সুফিবাদও আস্তে আস্তে নিজেকে ঝাপসা করে ফেলে। কারণ সুফিবাদ সংগ্রামী মতাদর্শ হলেও আক্রমনাত্মকসংগ্রামী মতাদর্শ না। কিন্তু সুফীজম তার কাজ অব্যাহত রাখে।
অতঃপর যুগের পরিবর্তন। ইউরোপিয়ান হওয়া। সেই হাওয়াতেই উপমহাদেশীয় কমিউনিজম এর জন্ম। যা আসলে সেই তাদেরই মতাদর্শ হয় যাদের অতীতরা জ্ঞানকে নিজের কব্জায় রাখতে অভ্যস্ত। কিন্তু ফর্মে চেঞ্জ আসে। তারপরও নেতৃত্বে তাদেরই ডি এন এ। বেশ কিছু এমনও মতামত পাওয়া যায়- উপমহাদেশীয় কম্যুনিজমের জন্মের অনেকগুলো কারণের মধ্যে একটি কারণ রাজনৈতিকইসলামের পথে বাঁধা সৃষ্টি। সে যাইহোক... আজ আমাদের উপমহাদেশে কমিউনিজম সেভাবে আমরা টের পাই না। যদিও উপমহাদেশের স্বাধীনতার প্রাক কাল থেকে ১৯৮০-৮৫ সাল পর্যন্ত তারা অসাধারণ ভালো ক্ষমতা দেখিয়েছে, কিন্তু তখনও মানুষের তথ্য পরিচিতি ছিলো না, ফলে যেমন করে পেরেছে ওরা বুঝিয়েছে, মানুষের দারিদ্র্যকে পুঁজি বা সম্বল করেই এরা যা কিছু। কিন্তু এখন? আমাদের পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুত্ববাদের মধ্যে গিয়ে তারা যেন তাদের মূলস্রোত ফিরে পেয়েছে!
মনে করি এই যে আমরা যদি আমরা যদি নিজেদেরকে নিজের মতো করে পৃথিবীকে দেখাতে চাই তাহলে আমাদের অবশ্যই পড়াশুনার অবাধ সুবিধে দিতে হবে। বহু ভাষাভাষী মানুষকে তার মাতৃভাষায় বিশ্ব জ্ঞানের সাথে পরিচিত হওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। এবং অবশ্যই পুঁজিবাদী সংস্কার থেকে বের করে আনতে হবে দেশের মন কে। আর একটা বড়ো কথা আমাদের দেশ যেহেতু বহু মতের ফলে আমাদের দেশকে কোনো এক মতের না হয়ে বহু মতের সমাহারে চলার পথ সন্ধান করতে হবে। যা আমাদের সংবিধান রচয়িতারা চেষ্টা করেছিলেন। সেই পথ ধরেই আরো এগিয়ে যাওয়া সম্ভব।@মণি জুয়েল
No comments:
Post a Comment