Monday, 19 July 2021

কোরবানী

এখন কয়েকদিন সারা পৃথিবীতে #কোরবানী'র সময়। কোরবানি মানে উৎসর্গ-আত্মত্যাগ। প্রতীক হিসেবে চুতুস্পদের গোস্ত বা মাংস পাড়া পরশি আত্মীয় স্বজনদের এবং অন্যান্য তুলনায় আর্থিক সামাজিক দরিদ্র মানুষদের মধ্যে দেওয়া হবে। এসব আসলে দারুণ জিনিস। অনেকে পাণ্ডিত্য ঝাড়বেন করবেন 'পশুহত্যা' বলে চাঁচাবেন। এটা আসলে যতোটা না 'পশুপ্রেম' তার থেকে বেশি ইসলাম বিদ্বেষ। অনেকে এটাকে দিতে চাইবেন না, বদলে মানবসেবা র অন্য ফর্মের কথা বলবেন, অ্যাক্চুয়াল ইডিয়ট দে আর...।

যাইহোক... পৃথিবীর সমস্ত নবী সহ মহাম্মদ নবীর ফলোয়ারগণ এই রীতি পালন টরেন। যা আসলে ইব্রাহিমীয় বা আব্রাহামিক ট্র্যাডিশন, ইসলাম ধর্মের মানুষরা ধরে আছেন। বাকি ইব্রাহিমীয়রা এভাবে পালন করেন না।
এই ব্যাপারটা চালু হওয়ার পেছনের কারণ হলো ইব্রাহীম নবী তাঁর একেশ্বরবাদী মতাদর্শের জন্যে তাঁর পুত্রকে উৎসর্গ করেছিলেন। তাওহীদের জন্যে নিজের পুত্রকে উৎসর্গ। যার প্রতীক মুসলমানেরা ধারণ করে আছেন, তাঁদের প্রধান নবী সাল্লাল্লাহুআলাইহি'র কথা মতো।

অন্যদিকে না ঢুকে আমি উৎসর্গ আত্মত্যাগ বিষয়ে আমার অল্প কিছু কথা বলে নিই। মনে রাখুন মুসলমানেরা ফলো করেন ইব্রাহিম নবীর প্রথাকে, যা বাস্তবায়িত করছেন। কিন্তু এই ঘটনার বাতেন কি? মারেফাত কি? বাতেন বলুন বা মারেফাত বলুন তা হলো একেশ্বরবাদের(বহুর বদলে এক)এর প্রতিষ্ঠা, আর এই প্রতিষ্ঠার জন্য নিজের থেকে প্রিয় কিছু উৎসর্গ আত্মত্যাগ।

এখন দেখুন নবী মহম্মদের একেশ্বরবাদের পেছনে কে কারা কিভাবে উৎসর্গ হয়েছেন, আত্মত্যাগ করেছেন। প্রথম উৎসর্গ বা আত্মত্যাগ তাঁর চাচা (কাকা) আবু তালিব, যিনি মহম্মদ নবীর মতাদর্শকে সাপোর্ট করতে গিয়ে সুখ্যাত সম্মানিত আড়ম্বরের জীবন ত্যাগ করে সমাজ বিচ্যুত হয়ে অনাহারে রোগভোগে মারা গেছেন। দুই হলো নবীর প্রেমিকা(স্ত্রী) শ্রদ্ধেয়া খাদিজা(নত হই), যিনি তাঁর সমস্ত সম্পদ এবং নিজেকে মহম্মদ নবীর মতাদর্শের জন্য উৎসর্গ করেছেন, এবং তিনিও সমাজ বিচ্যুতির শিকার হয়ে ঘাস পাতা খেয়ে বাঁচার চেষ্টা করেছেন, পরবর্তীতে ইন্তেকাল করেন। তিন, আবু তালিবের ছেলে মাওলা আলী, নবী যখন হত্যার মুখোমুখি এবং হিজরতে বাধ্য হচ্ছেন ঠিক সেই সময় মাওলা আলী'ই নবীর বিছানায় গিয়ে ঘুমোচ্ছেন(নবীর আদেশে) এটা জানার পরও যে, এই বিছানাতেই নবীকে হত্যার পরিকল্পনা হয়েছে। এটা আসলে মাওলা আলীর বাবার আত্মত্যাগ। অতঃপর পরবর্তীতে সেই মাওলা আলীকেও মহম্মদ নবীর মতাদর্শ বাস্তবায়নরত অবস্থায় মেরে দেওয়া হয়, এই হলো মাওলা আলীর নিজেকে উৎসর্গ করা নবীর মতাদর্শের জন্য। অতঃপর মাওলা আলীর দুই পুত্রকেও হত্যা করে দুষ্কৃতিরা, সেই মহম্মদের মতাদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে গিয়েই। হুসেইনের ইতিহাস আপনারা প্রায় সবাই কমবেশি জানেন, যাকে কারবালায় শহীদ করে দেওয়া হয়েছে। এই হুসেন হলেন নবীর নাতি, নবী কন্যা ফাতেমা(নত হই)র পেটের ছেলে, মাওলা আলীর পুত্র, আবু তালিবের ছেলের ছেলে, মানে পৌত্র।

উপরে যাঁদের নাম বললাম এরাই সকলেই নবীর মতাদর্শ ধারণ করে বাস্তবায়িত করতে গিয়ে বা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করতে গিয়ে নিজেদেরকে জীবনের বিন্দু ঢেলে গেছেন। এই হলো উৎসর্গ আত্মত্যাগ। @মণি জুয়েল

No comments:

Post a Comment