Monday, 16 August 2021

দেশ ও দেশের মানুষকে ভালোবেসে

এখন সারা পৃথিবী তাকিয়ে আছে আফগানস্থানের দিকে। আফগানস্থানে তালিবান'রা ক্ষমতায় বসতে যাচ্ছেন। কিন্তু রাষ্ট্রের ক্ষমতায় শুধু বসে গেলেই হয় না। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির একটা বিশেষ দরকার পড়ে। মানে কিছু সার্বভৌম রাষ্ট্রের সমর্থন দরকার পড়ে নিজের পক্ষে। এরকম অবস্থায় বৃটিশ প্রধান আহবান জানিয়েছেন তালিবানদের বৈধতা না দিতে। অন্য দিকে রাশিয়া তার দূতাবাস চালু রেখেছে আফগানস্থানে। তালিবানদের একটু সমস্যা হয়েছে তুর্কির সাথে, এটা মিটে যেতে পারে পাকিস্তানের মধ্যস্থতায়। এসব কথা আপাতত বাদ থাক। আগে মূল দিক বলে নিই।
তালেবানরা মূলত সুন্নি মতাদর্শের, বলা যেতে পারে খানিকটা দেওবন্দী আন্দোলনের ফলাফল ওরা ধারণ করেন। কিন্তু ওয়াহাবী আন্দোলনের মতাদর্শ তাঁরা খুবই বিশেষভাবে গ্রহণ করেন নি। এ হলো সাধারণ ধারণা। সময়ের সাথে সাথে তাঁরা নিজেদের চেঞ্জ করেছেন স্বাভাবিক নিয়মে। শিয়া সুন্নি যে ভেদাভেদ ছিলো সেটা অনেকটা কেটেছে। এখন তালবানে শিয়া সুন্নি উভয় পক্ষের লোকজনই আছেন। সেই সূত্র ধরে ইরানের সাথে তালিবানের সম্পর্ক আর খারাপ না। ফলে ধরে ধরে নেওয়া যায় ইরান তালিবানদের সমর্থন করবে। আর তাদের একটু সমস্যা এখানেই, যা হলো সৌদি আরব আর আরব আমিরাত তালিবানদের ক্ষমতা বিষয়ে কেমন অবস্থান নেয়। কারণ ইরানের সাথে একটা বড়ো দ্বন্দ্ব আছে সৌদির।

বলা যায় এদ্দিন পর্যন্ত আরব তেমন কিছুই বলে নি বা করে নি তালিবান বিষয়ে। এদিকে চীন দেশটি এশিয়ায় দাপট দেখাচ্ছে। ফলে তালিবানরা চীনের সাথে রাজনৈতিক সুসম্পর্ক গড়ে তুলবেন। চীনও।
উপরে আমি ইরান, তুর্কি, সৌদি, আমিরাত, চীন এই পাঁচটি দেশের কথা বললাম তালিবানদের কেন্দ্র করে। এই পাঁচ পক্ষ ও তালিবান পক্ষের মাঝখানে যে দেশটা দাঁড়িয়ে আছে সেটা হলো পাকিস্তান। দেখে শুনে ধারণা করা যায় তালিবানরা খুব একটা ঝামেলায় পড়বেন না। আরো একটা কথা OIC- মূল পাওয়ারগুলোর একটি পাকিস্তান। ফলে ওআইসি-র কিছু দেশ তালিবানদের পক্ষে আসবে বলে ধরে নেওয়া যায়। এগুলো খুবই সাধারন সাদামাটা কথা বললাম।

কিন্তু এখন বিশেষ আলোচ্য আমরা কেমন অবস্থান নেবো, মানে আমার দেশ কেমন সিদ্ধান্ত নেবে? জানি, যারা আমাদের পরিচালক আছেন তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন। আন্তর্জাতকবিষয়ক যেকোনো সিদ্ধান্তে সাধারণত জনমতের তেমন ডিরেক্ট ভূমিকা থাকে না। তবে থাকেই না এমন না। থাকলে আবার খুব বেশি থাকে। তবে তার জন্য রাজনীতি সচেতন নাগরিক সংখ্যার আধিক্য দরকার। তবে যাই সিদ্ধান্ত নিন না কেন তা অবশ্যই দেশের জনমতের ভিত্তি করে হয়। আশা রাখি আমার দেশ সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে, দায়িত্বশীলরা সঠিক পদক্ষেপ নেবেন। আমার মতো করো পরামর্শ তেমন গুরুত্ব রাখে না। তবুও একটু বলি - আমাদের উচিত ২০১৪ সালের পর থেকে আমাদের দেশীয় মুসলিমদের উপরে যে হিন্দুত্ববাদী অত্যাচার চলছে তা বন্ধ করে তাদের আলিঙ্গনে আনার চেষ্টা করা।গরুর মাংস সন্দেহে পিটিয়ে মারা, "NRC করে মুসলিমদের তাড়াবো" এ জাতীয়  বাজারে চালু অসাংবিধানিক কথা ও কাজগুলো বন্ধ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। যারা রাজনীতি জানেন তারা জানেন যেকোনো দেশের সব চেয়ে বড় সম্পদ তার জনগন। আর ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনসংখ্যা হলো মুসলিম। মুসলিমরা ভারতে সংখ্যাগুরুদের তুলনায় সংখ্যালঘু হলেও তাঁরা পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ মতাদর্শ ইসলামের ফলোয়ার। যে ইসলামের ব্যাপ্তি সারা পৃথিবীতে। এরকম অবস্থায় এই মুসলিমরাই পারেন দেশকে বহিঃশত্রুর হাত থেকে রক্ষা করতে। কারণ তাঁদের নবী তাঁদেরকে শিখিয়েছেন দ্বীনের সবচেয়ে বড়ো কাজের মধ্যে অন্যতম বড়ো কাজ নিজের মাতৃভূমিকে উন্নত করা, রক্ষা করা। তার মানে আমি সংখ্যাগুরুদের পাত্তা দিচ্ছি না এমন কিন্তু মোটেও না। আমি বলছি একসাথের মিলেমিশে'র কথা। রাজনীতি সচেতনরা ঠিকই বুঝবেন। @মণি জুয়েল

#মতামত  #আন্তর্জাতিক_রাজনীতি, #দেশ_ও_পড়শি

No comments:

Post a Comment