Saturday, 31 December 2016

পরবর্তী প্রজন্ম

-Moni Jewel(মণি জুয়েল)

আমি একটা নতুন পৃথিবীর স্বপ্ন দেখি
একটা নতুন মানবজাতি খুঁজি
কোনও ধর্ম নেই, কোনও ভেদাভেদ নেই
নির্দিষ্ট মত নয়!
মতাদর্শ নেই, বাদ্ নেই বিবাদ নেই
হাজার মতাদর্শ , হাজার মতামত, বিরোধের যোনি!

আমি একটা নতুন পৃথিবীর স্বপ্ন দেখি
শুধু একটি নতুন সমাজ খুঁজি
হোক না প্লাবন, মুছে যাক হাজার নিশান
আমিও না হয়
মুছে যাক মিথ্যে, মনুষ্যত্ব নাট্যমঞ্চ!!
আমি জানি,সে মনুষ্যত্ব বুলি আজ শয়তানের বাণী

কেউ মুসলিম,কেউ হিন্দু,কেউ মানুষ না
আমি অকালে মরে যেতে দেখি
হাজার সম্ভাবনাময় মানুষ,ওদের ধ্বজাতলে
ওদের পদতলে!
ও ধ্বজা মুছে যাক, বাহক মুছে যাক
নতুনপলির নতুনফুল বলবে 'সবার উপরে আমি'
।। 01.01.17/12:15দুপুর/ধুলিয়ান ।।

Friday, 30 December 2016

শিরোনামহীন কথাগুলো(তেরো)

-মণি জুয়েল(Moni Jewel)

তুমি প্রায় অভিমান করো, একাকী লুকিয়ে কাঁদতে থাকো
তোমার সে মান, অভিমান আমি ভালোবাসি
তবে তোমার সে কান্না নয়
কারণ তোমার কান্নায় সৃষ্টি কাঁদে..
সৃষ্টি সম্ভার তোমার জন্য, তোমায় ভালোবেসে
তোমার ব্যথায় ওরাও ব্যথা পায়
আমি তো উপলক্ষ্য মাত্র
আসলে তোমাকে ঘিরেই এ সৃষ্টি ঘুরতে থাকে..

এক চিলতে হেসে দেখো
এ পৃথিবী তোমার, হাজার সুখের সম্ভার ।
একটু হাসো, একবার নিজেকে ভালোবেসে দেখো ।
ব্যথা পাই তোমার ব্যথায়, সে হৃদয়ে আসলে আমি থাকি
।।30.12.16/04:40বিকেল/ধুলিয়ান ।।

Thursday, 29 December 2016

শিরোনামহীন কথাগুলো(বারো)

-মণি জুয়েল(Moni Jewel)

এসো না স্বার্থপর হই আরেকটু নিজেকেই ভালোবাসি

তুমি আমায় ভালোবাসো না, আমিও তোমায় না
আসলে আমি তোমায় না
ভালোবাসি আমি আমাকেই
তুমি আমার সুখের উপকরণ মাত্র
চুম্বনে পুলকিত হবো
তোমার ঠোঁট আমায় নিয়ে যাবে স্বর্গের দ্বারে ।
তোমার নিশ্বাস আমায় উষ্ণতা দেবে
তেমন ঠিক  তুমি তোমাকেই
তুমিও আসলে আমাকে না
আমিও তোমার অপুর্ণতা পুর্ণপাত্র
ঠিকঠাক পুষিয়ে নেবে,
আমার তালু তোমায় নিয়ে যাবে মিলন দ্বারে ।
আসলে তুমি আমায় না, ঠিক আমিও তোমায় না

তবু এই ভালোবাসা-

আমাকে ভালোবাসি বলেই, ভালোবাসি তোমায়
ভালোবাসি বলেই
এ পৃথিবী তোমার আমার
নয়তো,এ দুনিয়া নিয়ে আমাদের কি আসে যায়?

এসো নিজেকে দেখি, নিজেকে আরেকটু ভালোবাসি
                  ।। 29.12.16/ধুলিয়ান ।।
#কপিরাইট_রিজার্ভড

Wednesday, 28 December 2016

তোমার তরঙ্গে আমি খড়কুটো


-Moni Jewel(মণি জুয়েল)

সবাই ঘুমানোর পরে তুমি আসো
হাতে মদের গ্লাস, এলোমেলো নাইটি
জাগিয়ে দিচ্ছো- কি সে মধুর আবাহন!
আচ্ছন্ন পৃথিবী দুলে ওঠে
খসে পড়ে তোমার খোপা
দুই চোখে কত কথা কত কামনা কত পিপাসা
আমি ভিজে যাই ...

নিজ হাতে তুলে দাও মদেরগ্লাস,
আবে হায়াত্ সঞ্জীবনী সেই নেশায়-
খুলে যায় একে একে সব বাঁধন, দুরত্ব-
কমে যেতে থাকে, শুন্যতায়!
হৃদয়েরস্পন্দন, ঘনঘন শ্বাস,
তোমার গায়েরগন্ধ, নেশা,মত্ততা,প্রেমযৌনতা
আহ্হ্ ডুবে যাই.....

অতঃপর এলিয়ে দিলে সে শরীর
আহাহা.. সে কি রহস্য তোমার শরীরে!
শিৎকারে হমম্ স্বরে অস্ফুটে শুধু ×××তা'
হাতের মুঠোয় বন্দি পৃথিবী
দুই তালু তলায় বন্দি তুমি!
সেই পার্বত্য প্রবাহ ক্রমে গড়ে যায় মোহনায়!
আমি হারিয়ে যাই-

আমি আমাকে ভুলে যাই,
অস্তিত্ব উড়ে যায় পায়ের ধুলার মতো
অনন্ত প্রেমের অসীমতরঙ্গে আমি খড়কুটো।
  ।। 24.12.16/রাত11টা/ধুলিয়ান ।।
        #কপিরাইট_রিজার্ভড

পরিচয়হীন

-মণি জুয়েল(Moni Jewel)

ওরা অন্যের আলোয় আলোকিত, জ্বলতে শেখেনি
যখনই কোনো বলতে গেছি
তখনই
দপদপ করে দালাল এসে হাজির
ভেবে অবাকই হই
ওরা কারা, কার দালালী করে, কেন?

উত্তর পাই' নে বসেই থাকি
তখনও
হাসিমুখে এসে ওরা সব হাজির
তখনও অবাক হই
এরা কারা, কেন দালালী করে, কার?

ওরা আসলে নিজেকে চেনে না
অথবা
ওরা কেউই তারকা হয় নি
গ্রহ বিচ্ছিন শক্তি মাত্র, জ্বলজ্বল জ্বলতে শেখেনি
।। 28.12.16/Dhuliyan ।।

অগ্নিউপন্যাস

-Moni Jewel(মণি জুয়েল)

তোমাদের কথা লেখা আমার কাছে বিলাসিতা মনেহয়
লিখে কি হবে?
কিছুই হবে না তা একদমই নয়
হবে, আমার বই ছেপে যাবে, মঞ্চ সাজবে
কখনও সখনও টিভিতে বলতে শুনবে আমার মুখে-
তোমাদের কথা ।

ব্যস ওইটুকুই।

তারপর তুমি বিদেশ যাবে, তোমার ছেলে মাফিয়া দলে
ভেবেছো স্কুল যাবে?
মোটেও না, গেলেও শিখবে না
জানো, শিক্ষাও তো এখন  সওদার মাল!?
কত কত প্রতিষ্ঠান, ওই ডন বসকে পড়াতে পারবে?
হুঁ.. তোমাদের সাধ্যি!

ব্যস ওইটুকুই

তারপর অসুখসঙ্গী তুমি ফিরলে! আজভোট দিতে হবে
কয়েক বোতল মদ্
তোমার বউয়ের শাড়ি, ছেলেরা?
ওরা তো এখন জনহিতৈষী বাবুর বডিগার্ড!
অতঃপর আসীন ওরা।তোমার বউয়ের কাপড় ছিঁড়ে!
এই তোমাদের কথা...

ব্যস এইটুকুই

যে টুকুর আর শেষ নেই, সমাপ্তিহীন এক অগ্নিউপন্যাস ।।
  ।। 28.12.16/01:30দুপুর/ধুলিয়ান ।।

Tuesday, 27 December 2016

কথা গান(চার)

- মণি জুয়েল(Moni Jewel)

কি নামে ডাকবো তোমায় নীলজোছনা
দুরে বসে হেসে ভেসে পাগল কোরো না
যদি তোমায় আমি পাই,
তবে আর কি চাই!
তাই বলি ভালোবেসে এ বুকে ছুটে এসো না...

যদি তুমি ডেকে নাও, সাথে সাথে ভাসাও
এক পলকে যেতে পারি ।
নদীর বুকে-
জোছনা রাতে তুমি আমি ভাসতে পারি
যদি তোমায় আমি পাই
তাই বলি ভালোবেসে ও বুকে তুলে নাও না...

যদি জ্বলে যেতে হয়, হবো তাই না হয়
সেই প্রেমে জ্বলতে পারি ...
তোমার দুঃখে
তোমার সুখে তুমি আমি হাসতে পারি
যদি আমার হয়ে যাও...
তাই বলি ভালোবেসে আমায় নিয়ে চলো না ।।
।। 27.12.16/06:00সন্ধ্যে/ধুলিয়ান ।।
      #কপিরাইট_রিজার্ভড

কথা গান(পাঁচ)

- মণি জুয়েল(Moni Jewel)
জোছনা....
আর এলো না, আমায় ভুলে থেকে গেলো
ফিরে এলো না...
কত কথা বলার ছিলো- সব বলা হলো না

মনের আকাশে ঘুমাট বাঁধে নিশির কুয়াশা
দরবারী কান্না সুরে বলে
ফিরে এসো না.....
কত কথা বলার ছিলো- সব বলা হলো না।

ঘুমিয়ে আছে দুরে সুখেতে, চোখেরই ভাষা
ভেসে ভেসে কেঁদে বলে
ফিরে এলো না...
কত কথা বলার ছিলো- সব বলা হলো না।
।। 27.12.16/11:40pm/Dhuliyan ।।

তোমায় দেখিয়া

তোমায় দেখিয়া
- মণি জুয়েল(Moni Jewel)

তোমাকে দেখি নয়ন জুড়িয়া
অন্তর মন (এই) পরাণ ভরিয়া
হাসিতে হাসিতে তুমি কাড়িলে মন-ভূমি
        ঐ হাসিতে দিলে (তুমি) পাগল করিয়া |

লোহিত শাড়িতে অঙ্গ নদীতে মজিয়া মরিলে কি হবে!
দরিয়া মাঝেতে শেষের.বেলাতে ডুবিয়া মরিলে কি হবে?

অঙ্গের বাঁকেতে প্রেমের.নেশাতে আমি যাই মজিয়া তোমায় দেখিয়া
          ঐ বাঁকে দিলে (তুমি) পাগল করিয়া |

নয়ন মিলিয়ে পিরিতে জুড়িয়ে ওই বুকে নিও
মিলিয়া থাকিও জুড়িয়া থাকিও, হৃদয় ভরে নিও

যুগল চোখেতে ভাবের নেশাতে- গেছি সব ভুলিয়া তোমায় দেখিয়া
         ঐ চোখে দিলে তুমি পাগল করিয়া |
                      ||স্বত্ব সংরক্ষিত||

কথা গান(তিন)

-মণি জুয়েল(Moni Jewel)

আমি নতুন তোমরা সব নতুন
নতুন গাছে আমরা ফুল নতুন
নতুন নতুন আমরা নতুন।।

নদীর জল নতুন, এই জীবন নতুন
ভেবে দেখো এ নদীও নতুন
ওপাড় ভেঙে এপাড় গড়ে...তরঙ্গ নতুন
আমি নতুন তোমরা সব নতুন
নতুন নতুন আমরা নতুন।।

যারা
ফুটেছে সে ফুল, কলি আমরা নতুন
দেখো সুবাস চন্দনও নতুন
ওদের মাল্য শুকিয়ে গেলো, আমরা নতুন
নতুন গাছে আমরা ফুল নতুন
নতুন নতুন আমরা নতুন।।
।। 27-12-16, 02:50এ.এম,ধুলিয়ান ।।


নীলজোছনার প্রতি


-Moni Jewel(মণি জুয়েল)

তুমি প্রায়ই জানতে চাও- কেন ভালোবাসি
আমি বলি জানি না!
তুমি অবাক হয়ে চেয়ে থাকো
তখনই আমি বলি- তোমার এ চাওয়া ভালোবাসি
আলতো লজ্জায় লাল মুখ ফেরাও
আমি তখনও বলি- এ লজ্জাবতী আমি ভালোবাসি

আর তখন তুমি লজ্জায় মুখ ফিরিয়ে নাও
আড়াল করো সরে যাও
আমি অবাক হয়ে চেয়ে থাকি
দেখতে থাকি সেই অপার সৌন্দর্য, উত্থাল তরঙ্গে
ভাসতে ভাসতে বলি-আমি ভালবাসি
ভালোবাসি। বিহঙ্গম ফিরে চাও, আমি বলতে থাকি..

বলতে থাকি - তুমি জীবন, তুমিই পৃথিবী
সৌন্দর্যের উত্থাল তরঙ্গ.......
অবাক বিস্ময়ে বলো- আমি কি?!
আমি বলি -একবিন্দু জীবন, তুমিই জীবন জলধি ।।
  ।। 27.12.16/02:00দুপুর/ধুলিয়ান ।।

Monday, 26 December 2016

কথা গান(দুই)


-Moni Jewel(মণি জুয়েল)

আমায় ফেলে চলে যাবে, জানলে কি ভালোবাসি
ও.. নীল রূপসী
আমায় পাগল করে চলে যাবে,
(আমায়)দিওয়ানা বানিয়ে যাবে.... 
নীল রূপসী.....। জানলে কি ভালোবাসি ।।

বসন্তদিন ছিলো ভালো, কেন যে বৈশাখ আসিলো
আগুনে পুড়িয়ে হিয়া, বৈশাখী ভাসাইলো
ও... নীলরুপসী
কালোমেঘে মন ভাসিবে, আকাশের চাঁদ লুকাবে
জানলে কি ভালোবাসি?
ও.. নীলরূপসী
আমায় পাগল করে  চলে যাবে,
জানলে কি ভালোবাসি।।

সেই বিকেলের তুফানক্ষনে, অমিত্র যত মনে মনে
রঙে অঙ্গ লুটিয়া, দুশমন হাসাইলো
সে নীল রূপসী
শত্রু যদি হাসাইবে, তুমি আমায় কাঁদাইবে
জানলে কি ভালোবাসি?
ও.. নীল রূপসী
আমায় দিওয়ানা বানিয়ে যাবে,
জানলে কি ভালোবাসি।।
।। 27.12.16/01:12am/Dhuliyan ।।

ধর্ম, ধর্মনেতা, আদর্শ এবং_সুবিধাবাদী_আমরা

#ধর্ম_ধর্মনেতা_আদর্শ_এবং_সুবিধাবাদী_আমরা

-Moni Jewel(মণি জুয়েল)

পৃথিবীর আমরা প্রায় সবাই স্বার্থান্বেষী, যখন যেখানে যে/যারা আমাদের পক্ষে কথা বলে, লড়ায় করে কিছুটা হলেও আমাদের পক্ষপাতিত্ব রক্ষা করে তখনই আমরা তাঁর বা তাঁদের অনুগামী বলতে শুরু করি নিজেদের। আমরা শুধু লক্ষ্য করি তাঁদের সাফল্য, প্রেক্ষাপট না ।আর সাফল্য পেলেই তাকে নিয়ে নাচানাচি করি। অনেক গল্প শুরু করি সেই সং্গ্রামীদের নিয়ে যাঁরা কিছুটা(বেশ কিছুটা)  সফল হলেন। কিন্তু তাঁর সংগ্রামে সহোযোগিতায় খুব কমজন আমরা থাকি, থেকেছে।
মহাবীর-
ভারতীয় ইতিহাসে একজন মহান মানুষ, জৈন মতাদর্শের কর্তা বলা হয় তাঁকে । তিনি বলতে শুরু করলেন জীব হত্যা মহাপাপ, অহিংসা পরম ধর্ম ইত্যাদি।  ঠিক তখনই কিছু ভীতু, বিলাসী, সুযোগসন্ধানী, ধুরন্ধর আমাদের পূর্বপুরুষরা তাঁর দলে সামিল হলেন নাক কান চোখ মাথা বন্ধ রেখে, বুঝে না বুঝে বলতে শুরু করলেন সেই এক কথা। যা আজও চলছে। এখন তো ধারণা করা হয়েই থাকে অহিংসা মানে বীরত্বের প্রকাশ না করে চড় থাপ্পড় খেতে থাকা । কিন্তু ভাবতে যে বিষয়টা বাকী থেকে যায় তা হলো- উনি মহাবীর কেন তাহলে? যেখানে বীরত্ব নেই বীরত্বের প্রকাশ নেই সেখানে বীরদের মাঝে মহান কেন? তাহলে তিনি কি সে নামের উপযুক্ত ? বলা যেতে পারে নামের সাথে মিল নাও থাকতে পারে কাজের। কথাটা হয়তো ঠিক, সাধারণের ক্ষেত্রে, তাই বলে মহাপুরুষের ক্ষেত্রে নয়। যদি নাম ও কাজে মিল না থাকে তাহলে প্রথমেই ফ্লপ তিনি!
কিন্তু না...তিনি আসলেই বীরশ্রেষ্ঠ, মহাবীর । তাই তাঁর আদর্শ হলো অহীংসা । যিনি যখন চরম বীরত্ব হাসিল করতে পারেন তখনই তাঁর ধর্ম হয়ে যায় অহিংসা, যদি তিনি আদর্শ মানুষ । কারণ তিনি লড়বেন কার বিরুদ্ধে? আর যারা বাকী তার সময়কালে তারা সবাই তাঁর চেয়ে কম বলশালী, জ্ঞানী। দুর্বলের সাথে লড়ায়ই হলো হিংসা, সেখানে বীরের কোনও বীরত্ব নেই।
কিন্তু আজকাল সবাই একবাক্যে বলেন - অহিংসা পরম ধর্ম। অনেক উদাহরণ তুলে ধরেন । একদমই ঠিক। তবে আগে বীর হতে হবে তো! কারণ বীরের ধর্ম অহিংসা ।  আর এই বীরত্ব হাসিল করাটায় হলো সংগ্রাম। নিজের সাথে নিজের, অন্য সবকিছুর সাথ নিজের। এই সংগ্রামে বিজয়ীর ধর্ম হলো অহীংসা, এই বিপ্লবের পরে প্রতিষ্ঠিত হয় অহিংসা । অনেকে বলবেন মহাবীর কি খুব বলশালী ছিলেন না কি? যদি বলা হয় হ্যাঁ তিনি খুব বলশালী ছিলেন তবে অনেকে প্রশ্ন! তাই উত্তরে এ কথা বলা যেতে পারে তিনি যদি বলশালী না ছিলেন তাহলে তার মত(ইজম)সে সময়ে প্রতিষ্ঠা পেলো কি করে, সনাতনী বৈদিক দাপটের সামনে??
সংগ্রাম_জেহাদ_বিপ্লব-
অন্যদিকে জেহাদী স্বর্গে জান্নাতে যাবে বলে প্রচার শুরু করলেন মহম্মদ(সঃ)। শুনে মুসলমানদের কিছু গোষ্ঠী  তো এখন শুধু পারলেই মানুষ হত্যা করবে এমন মনের হয়ে গেছে। শুধু এখন নয় প্রায় তার সময় থেকেই! উনি যখন শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে অস্ত্র ধারণ করলেন, সেই সময়ে কিছু কুচক্রীও সামীল হলো এই ভেবে -এবার অস্ত্র নিয়েও ধর্ম হয়! কিন্তু আসলে তারা মহম্মদের আদর্শ থেকে অনেক দুরে চলে গেছে,গেছিলো। যে মানুষটা সারাজীবন লড়ায় করলেন শান্তি অর্থাৎ ইসলাম প্রতিষ্ঠিত করতে সেই মানুষটার মতাদর্শ কেমন করে বর্বর কিছু গোষ্ঠীর মতো হলো বা বর্তমানে কথিত কিছু ইসলামী সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের হয়ে গেলো! এটা বড় ভাবনার বিষয় আজকাল!
কিন্তু যতক্ষণ না আমরা স্থান কাল পাত্র সঠিক নির্বাচন করতে পারবো ততক্ষণ সঠিক সিদ্ধান্তও আমরা গ্রহণ করতে পারবো না, সঠিক ব্যাখ্যাও সম্ভব নয়।
মহম্মদ নবী যে সময় কালে যাদের বিরুদ্ধে লড়ায় করতে বাধ্য হয়েছিলেন, তাঁকে আমাদের ভাবতে হবে সেই সময়ের বিচারে । তিনি যদি তাঁর সময়ে অস্ত্র ধারণ না করতেন তাহলে অশান্তিকেই প্রশ্রয় দেওয়া হতো, সুতরাং তুলনায় অনেক ভালো অস্ত্রে অস্ত্রকে পরাজিত করা, শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য । অশান্তিকে দমন করতে অস্ত্র ধারণ করা অবশ্যই দরকার। ফলে শান্তি সুরক্ষিত হয়। তিনি যদি তখন বিপ্লব না করতেন সংগ্রাম না করতেন তাহলে অবস্থা কল্পনা করা যেতেই পারে কতটা বাজে হতো। কারণ সে সময়ে পৃথিবীর সবচেয়ে মন্দ স্থান ছিলো সেই এলাকা যেখানে মহম্মদ নবী জন্মগ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু আমরা সাধারণরা তা কতটা বুঝে কতটা না বুঝেই নিজের মন মতো আলফাল বলে যাই! অনেক অল্প-শিক্ষিত আমারা এ নিয়ে অনেক বাজে মন্তব্যও করে থাকি! এ ভুল ব্যাখাতেও আমারাই দায়ী। সত্য সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারি না, উপস্থাপন করতে পারি নি।
আর এগুলো হলো সুযোগসন্ধানী আমাদের পূর্বপুরুষদের ফালতু মানসিকতার কারণে । তারা সংগ্রাম না দেখে শুধু দেখেছিলেন সংগ্রামের ফলাফল। যখনই মনে হয়েছে পক্ষের কেউ আমাদের হয়ে কথা বলতে বলতে সংগ্রাম করতে করতে আজ সাফল্যের চরমে তখনই সুযোগসুবিধা পেতে দলে গিয়ে নাম লিখিয়ে,  তারপর -অপব্যাখ্যা ব্যাখা যাচ্ছেতাই ।
মহাভারতের যুদ্ধের কথা এখানে একটু বলা দরকার - যে কৃষ্ণকে আমরা জানি প্রেমের প্রতীক, কোমল হৃদয় যার, তিনি কিভাবে অর্জুনকে যুদ্ধ করতে তাগিদ দেন! এখানে আমাদের ভাবতে হবে । তিনি তো ভীমকে বলতে পারতেন যুদ্ধ করতে।  তা না করে কেন অর্জুনকে বললেন? যে অর্জুন রাজী হচ্ছেন না! কারণ তিনি জানতেন মন্দের বিরুদ্ধে এমন একজন কোমল হৃদয় ভালমানুষ অস্ত্রধারীর দরকার যে শুধু অশান্তির কারণে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে অস্ত্র ধরবে। আর এটাই আসলে চরম প্রেমের প্রকাশ । কিন্তু যদি ভিমকে আদেশ করতেন যুদ্ধ করতে তাহলে হয়তো চিত্র অন্য হতো, খুব মন্দ হতো ।
আমরা যে আসলে সংগ্রাম বিমুখ, শুধু সংগ্রামের ফলে উদ্ধার হওয়া সুযোগ সুবিধার দিকেই বেশীরভাগ দেখি, এবং যুগে যুগে তত্ত্বের অপব্যাখ্যা করে নিজের মন মতো করে থাকে। তার প্রমাণ আজও জ্বলন্ত!
অন্যদিকে-
কয়দিন আগে একজন বিখ্যাত সংগ্রামী মানুষের মৃত্যু হলো। ওনার নাম ফিদেল কাস্ত্র । অনেক আলাপ আলোচনা সভা ইত্যাদি ইত্যাদি হলো । হওয়া অবশ্যই দরকার। খুব খুব দরকার। কিন্তু একটু ভাবলেই ছেদ পড়ে আসলে মুখে মুখে যে এতো এতো সংগ্রাম তাহলে 'আমরা_বক্তাদের' জীবন কতটা সংগ্রামী? আসলে তা নয়, এখানেও মহান ওনার সংগ্রামের ফলে অর্জিত সুযোগ সুবিধাগুলোর জন্য ওকে নিয়ে নাড়া ঘাটা, তা ছাড়া সাধারণত আর কিছুই না! (তবে সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না) ।
বহু দল বামপন্থীদের তাঁরা সবাই মহান কাস্ত্রোর কথা ওড়ালেও জীবনে এবং রাজনীতিতে কতটা প্রয়োগ করেন তা বড় ভাবার বিষয়।
আর যদি সংগ্রামী মানুষের কারণেই যদি আমরা তাঁকে অনুসরণ করতাম তাহলে আমাদের এক মনোভাব কোথায়?
আসলে সুযোগসন্ধানী আমরা যখনই একজন সংগ্রামী প্রতিষ্ঠিত বীরের সন্ধান পাই তখনই আপন স্বার্থে তোষামোদ শুরু করি! মুখে হাজার বললেও তা তাঁকে অনুসরণ নয়(বেশিরভাগ),আসলে তার প্রতিষ্ঠিত সুখের লালসা!
যদি সংগ্রামকেই জীবনে প্রয়োগ করার জন্য একজন আদর্শ লোক মনে করি তাহলে এই ভুখন্ডেরই একজন মহান শিবদাস ঘোষ কে কয়জন জীবনে প্রয়োগ করার চেষ্টা করি?(পক্ষপাতিত্ব করছি না, তুলনাও না) ।তুলনায় খুব কমজন তাঁকে চেনেন!
কাস্ত্র অবশ্যই মহান কিন্তু তাকে এখানে এ'দেশে প্রয়োগ করতে হলে অনেক সমস্যা, কারণ তাঁর স্থান পাত্র  আলাদা । তিনি তার স্থানের সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করেছেন,  এবং কিছুটা সফল হয়েছেন ।
কিন্তু শিবদাস ঘোষ, যিনি এই উপমহাদেশের একজন মহান চিন্তাবিদ, দার্শনিক, বিপ্লবী । কৈ তাকে নিয়ে এমন সমারোহ লক্ষ্য করি না!? অথচ সন্দেহের উর্ধ্বে তিনি বর্তমানেও বামপন্থী আদর্শ হতেই পারেন উপমহাদেশের ।
আমরা যদি আসলেই সংগ্রামী মনের হতাম তবে হয়তো হতো কিন্তু তা নই আমরা(সাধারণত)। আসলে সংগ্রামের ফলে সুযোগ সুবিধার জন্যই কিছু গ্রহণ এবং বর্জন করে থাকি । সেই সংগ্রামকে নয়!
আমরা সেদিনই তাঁদের অনুসারী বলতে পারবো নিজেদের যেদিন আমরাও স্থান-কাল-পাত্রের বিচারে সিদ্ধান্ত নিয়ে সংগ্রাম করবো বৃহত্তর স্বার্থে। একমাত্র সেদিনই নিজেকে বলতে পারবো তাঁদের আমরা অনুসারী।।
(আলোচনায় অনেককিছু বাকী থেকে গেলো । ভুলভ্রান্তি থাকলে পাঠক-পাঠিকা ক্ষমা করবেন)
             ।।19.12.16/01:40দুপুর/ধুলিয়ান।।

Saturday, 24 December 2016

কবিতা


- মণি জুয়েল

তুমি হাজার কবির নিত্য যৌনসঙ্গী
পিপাসী মনের জল জীবন তরঙ্গী
তবু কি তোমায় বৈশ্যা বলা যায়!
না কি তোমায় ছেড়ে বাঁচা যায়?
   ।। 25.12.16/দুপুর 1টা ।।

কথা গান


-Moni Jewel(মণি জুয়েল)
তুমি আমি মিলে পথে পথে হাঁটছি
হাঁটছি আর দেখছি
চায়ের ধোঁয়াতে কত নীতি উড়ছে
চ্যানেলের সিটে বেশ্যাবৃত্তি হাঁকছে
প্রভুভক্তরা ভৌকছে
পথের মিছিলে তুমি আমি হাঁটছি ।।

কত কথা ধোয়া হয়ে গেলো
চায়ের গ্লাস গরম জলে,
সেই ছেলেটির ফ্যালফ্যাল ও
দৃষ্টি জিলিপির জালে।
ও যদি জানতো তবে কি কাঁদতো?
(দেখো)গান তুলে নেবে একদিন....
সুরে বেসুরে  
গুনে দিন গুনছি, তুমি আমি হাঁটছি ।।

কত ব্যথা ও ড্রেনে বেয়ে গেলো
দগদগেআগুন ফ্যানজলে,
চালকের রক্তে এ পথ ভিজলো!
অজানা কি, কে না জানে?
ওরা যদি জানতো, তবে থেমে যেতো!
আগুন জ্বলবে জ্বালবেই একদিন....
খেয়ালে বেসুরে
দেখছো দেখছি, খেয়ালে পথ চলছি ।।
।।24.12.16/07সন্ধ্যে/ধুলিয়ান।।

Thursday, 22 December 2016

সাধারণ কথা গান

সাধারণ_কথা_গান
-Moni Jewel
প্রেমের কবিতার মতো
কানে কানে বলো না এসে
চলো যাই২ভেসে ভেসে
অনেক দুরের২ দেশে

কত নিশি প্রহর জেগে থেকেছি
বলো নি তো আজও আমায়
কত রাত ভোর হলে তবে
তুমি এসে ডেকে নেবে-
এই তো আমি২ এসে গেছি ।

আসারই আশায় পথে চেয়েছি
ডাকে নি তো আজও আমায়
কত কথা সুর পেলে তবে
কবিতা যত গান হবে?
প্রেমের কবিতা দিলাম সুরে....
23.12.16/02:35am/Dhuliyan

তোমার পলকে বন্দী আমি

#তোমার_পলকে_বন্দি_আমি
- মণি জুয়েল(Moni Jewel)
ইয়ে মেরি জিন্দেগি তেরা প্যায়ার হে
জো তেরি খুশি ও.. মেরি খুশি হে
বস্ মেরি জেন্দেগি তেরা প্যায়ার হে-

যদি তুমি ডেকে নাও, যদি বলো ডুবে যাও
আমি হারাতে পারি
আমি ডুবে যেতে পারি,
তোমার এক পলকেই মিলিয়ে যেতে পারি
আমি তো জানি, আমি আমার নই, কেউ আমার নয়!
আমি বন্দি তোমার পলকে!
যদি পলক পড়ে যায়, যদি এ বাঁধন ছিড়ে যায় -
কি হবে!

ইয়ে মেরি জিন্দেগি তেরা প্যায়ার হে
জো তেরি খুশি ও.. মেরি খুশি হে ।।

যখন সামনে আসো, আয়নার মতো দাঁড়াও
আমি দেখতে থাকি...
আমাকেই আমি দেখি..
অপলকে পলকে! জানি, নিভে যেতে পারি
পলকে বন্দি, জীবন, আমার নয়, আমিও আমার নই!
বন্দি জীবন তোমার পলকে!
যদি পলক পড়ে যায়, যদি বাঁধন ছিঁড়ে যায়,
কি হবে!

কিউ কি জিন্দেগি তেরা প্যায়ার হে
জো তেরি খুশি ও.. মেরি খুশি হে
বস্ মেরি জিন্দেগি তেরা প্যায়ার হে।
     ।। 22.12.16/05:00সন্ধ্যে/ধুলিয়ান ।।
×উর্দু কথাগুলো নুসরত ফতে আলি সাহেবের গান থেকে নিয়েছি×

সাধারণ কথা গান

মণি জুয়েল(Moni Jewel)

বর্ষা এসে ভাসিয়ে গেলো, হেমন্ত ঘ্রাণে ডুবিয়ে গেলো
তবু তার দেখা নেই যার আশায় এ যৌবন ফুরালো
ফেসবুক ফেসবুকে হলো এ বুক খালি থেকেই গেলো
এখন এ পৌষের শীতে উহুহু শীতল গীতে
কাকে ডাকি কে কার শোনে,
আমি জানি আর মন জানে কে সে এ মনের কোনে
সাঁঝ রাত দিন ভোর জ্বালায় আগুন যে গোপনে মনে ।।
     21.12.16/05:00সন্ধ্যে/ধুলিয়ান

Tuesday, 20 December 2016

বলো না

#বলো_না
-Moni Jewel(মণি জুয়েল)
নীল জোছনা ডাকি, না তুমি জোনাকি
বলো বলো না... কি নামে ডাকি
নীল জোছনা ডাকি, না তুমি জোনাকি??

যখন আঁধার হয়ে যায়, ভিজি তোমার জোছনায়
যখন অমাবস্যা হয়, তখনও তোমার ছটায়
হাজার রজনীর ঘোর তমসায়
আমি যে তোমাকেই পাই
বলো..বলো না কি নামে ডাকি?
নীল জোছনা ডাকি, না তুমি জোনাকি??

তোমার চোখের মণিকোঠায়, দেখি আমি আমায়
বেখেয়ালে কত রাত হায় সকাল হয়ে যায়
এই মনের আঁধার মুছে যায়
নিরালায় তোমাকে পাই...
বলো.. বলো না কি নামে ডাকি?
নীলজোছনা ডাকি, না তুমি জোনাকি??
।।20.12.16/10:35রাত/ধুলিয়ান।।

Sunday, 18 December 2016

জীবন মৃত্যুর মাঝ বরাবর

#জীবন_মৃত্যুর_মাঝ_বরাবর
-Moni Jewel (মণি জুয়েল)
হামকো কিসি কি গম নে মারা, ইয়ে....কাহানী ফির সহি-
যখন আমি একাকিত্বের বিষনিঃশ্বাসে
পুড়ছি
যখন আমার শোকে মায়াময় বাঁশপাতা
থেমে গেছে ।
তারা'রা কাঁদে, শূন্যে যখন গুমোট শূন্যতা,
ঠিক তখনই
আয়ানেরবুকে নুর জ্বেলেযাচ্ছে, নীলজোছনা ।
ঘন ঘন শ্বাসে,
শিৎকারে ও..পৃথিবী রঙীন ।
সুখের তারারা সম্ভোগ সুখের সাক্ষি ।
এপাড়ে তখন আমার পৃথিবী ধসুর, বিষশ্বাসে-
না মরণ না জীবন । না আমার আমি, না আমার সে!

চোখের সামনে ভেসে ওঠা সেইরাত-
ওহ্হো সে রাত!
জোছনায় ভিজেছিলাম আকন্ঠ, যেমন পস্বিনী সিন্ধে!

দিলয়ালে, মুঝে ক্যা দেখ রহে হো? তুমারা ভি ইয়ে সহি ।
    ।। 18/12/16/ধুলিয়ান/রাত11টা ।।
×গুলাম আলি সাহবের গানের একটা লাইন নিয়েছি×

Saturday, 17 December 2016

ব্যক্তি, নিরপেক্ষতা, মানুষ এবং ধর্ম

ব্যক্তি_নিরপেক্ষতা_মানুষ_এবং_ধর্ম
-Moni Jewel(মণি জুয়েল)
সবাই যখন ধর্মনিরপেক্ষতা, মানবতাবাদ, ব্যক্তি স্বাধীনতা, ব্যক্তি চিন্তা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কথা বলেন, আলাপ আলোচনা করেন তখন আমার মনে এই প্রশ্নগুলো জাগে- ব্যক্তি কে? ব্যক্তিত্ব কি? ধর্ম কি? ধার্মিক কারা? মানুষ কাদের বলা যায়?
বিশেষ জ্ঞানী মানুষরা বলেছেন -মানুষের পেট থেকে জন্মগ্রহণ করলেই মানুষ হওয়া যায় না। আমাদের বাংলার কথাসাহিত্যিক শরৎবাবুও তা বলেছেন আরো একটি কথা যোগ করে, তা হলো এমন প্রায় - পশুর পেট থেকে জন্মালে পশু হয়, কিন্তু মানুষের পেট থেকে জন্মালেই মানুষ হওয়া যায় না।
তাহলে মানুষ কাদের বলা যাবে? না...মানুষ হতে হলে মনুষ্যত্ব অর্জন করতে হবে। কি ভাবে আমরা মনুষ্যত্ব অর্জন করবো? এর পথ কি, সিস্টেম কি? কেউ বলেন গুরু সঙ্গ নিতে হবে, কেউ বলেন আদর্শ ব্যক্তিত্বদের অনুসরণ করতে হবে ইত্যাদি।
অনুসরণ.....
অনুসরণ কথাটার মানে আমরা অল্প শিক্ষিতরা সাধারণত মনে করে থাকি - কোনও বা কিছু আদর্শ ব্যক্তির মত এবং পথকে নিজের জীবনে নকল করা(চেষ্টা করা)। যে পথে তাঁরা যেভাবে এগিয়েছেন সেভাবে তা তা করা, তাহলেই অনুসরণ হয়। ফলে পুণ্য হয়, কারো মতে জীবনের মান ভালো হয়, আরো কারোদের মতে বিপ্লবের পথ সুগম হয়।
বিপ্লব......
এই বিপ্লব শব্দটা আমাদের সময়ে খুব বলা হচ্ছে, বিশেষত বামপন্থী মনের মানুষরা তুলনায় বেশীই বলেন। মন্দ না । অবশ্যই বিপ্লবী মন গড়া দরকার সকলের। তাহলে বিপ্লব কথাটা কি? এর অর্থ কি?  না.... বিপ্লব কথাটার অর্থ হলো আমুল পরিবর্তন। তাহলে আমরা আমুল পরিবর্তন করবো কি স্টাইলে? তার সিন্ট্যাক্স কি?
বিন্যাস হলো - নিজেকে যা কিছু সবই বাদ দিয়ে নতুন কিছুকে সৃষ্টি করা মুক্ত চিন্তার মাধ্যমে এবং তার প্রয়োগ করা জীবন ও সমাজ জীবনে।
আর এই বিপ্লবের জন্য সবচেয়ে বড় যে জিনিসটার দরকার হয় তা হলো ব্যক্তি এবং ব্যক্তিত্বের। আর ব্যক্তিত্ব সৃষ্টি হয় স্বাধীন চিন্তার সাহায্যে।
কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো যাকে আমরা ব্যক্তি বলি,  ভাবি তা আসলে ব্যক্তি নয়। আমাদের খুব কম জনের ব্যক্তিত্ব আছে, আমরা আসলে অনেকেই ব্যক্তি নই, ব্যক্তিত্ব নেই!
ব্যক্তি হয়ে আমরা সবাই জন্মালেও বড় হতে না হতেই আমাদের ব্যক্তিত্ব শেষ হতে থাকে। প্রথমে বাবা মা আত্মিয় স্বজনের নানাবিধ শিক্ষার চাপে! পরবর্তীতে সমাজের চাপে। কথাটা শুনতেলএকটু মন্দ ঠেকলেও এটাই সত্যি। কথা উঠবে তাহলে সন্তানকে সুশিক্ষা দেবো না???
এই যে সুশিক্ষা কথাটা এটা আমাদের কে নির্ধারণ করে দিলে? কিসের ভিত্তিতে ভালো মন্দ নির্ধারণ করা হলো? মুসলিম রা যা কুসংস্কার বলে তা-ই অন্যদের সংস্কার, আবার মুসলিমরা যা সংস্কার মনে করে তা আবার অন্যরা সমালোচনা করে। এভাবে স্থান কাল পাত্রের বদলে সু হয় কখনো কু কখনও সু। আসলে কু কিছুই না সবই সু, সময়ের বদলে যাওয়া মাত্র ।অন্যদিকে দৃষ্টিকোণের পার্থক্যও।
(সে আলোচনা পরে করা যেতে পারে আরো বিস্তারিত ) ।
একটা শিশু যখন বড় হলো তখনই তাকে শিখিয়ে দেওয়া হলো - মসজিদ, মন্দির, গির্জা, হিন্দু, মুসলিম, খৃষ্টান, ইহুদি, কমিউনিস্ট(সাধারণত বয়সে একটু বড় হলে)! তারপরে জাত ধর্ম দেশ গোত্র ইত্যাদি। আর এভাবেই মৃত্যু শুরু  হলো ব্যক্তির। পরে যা গড়ে উঠলো তা হলো সমাজের রেওয়াজের সমষ্টি। যার আর কোনো ব্যক্তিত্ব নেই! বাবা মা সমাজ যে কতবড় শত্রু একজন সন্তানের তা ভাবা দরকার। কিন্তু কাউকে সরাসরি দোষ দেওয়া ঠিক হবে না, এক্ষেত্রে।
যার ব্যক্তিত্ব নেই তার ব্যক্তিগত চিন্তাও থাকার কথা না, এবং সে-তারা-আমরা যতই বলি না কেন-স্বাধীনতা, তা আসলে পরাধীনতা। যা আমরা নিজেরাও জানি না! আমাদের অজান্তেই আমরা পরাধীন।
আর যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা পরাধীন ততক্ষণ আমরা মনুষ্যত্ব হাসিল করতে পারি নি। মনুষ্যত্ব হাসিল করার আগে আমরা যতই ওমুক বাদ তমুক বাদ(ইজম) বলি, সবই ফাঁকা বুলি মাত্র।
আর এই মনুষ্যত্ব হাসিল করতে যা করতে হয় তা-ই বিপ্লব। নতুন করে প্রকৃত আমি'কে আবিষ্কার করা। তার মানে এই না যে যা কিছু সবই মন্দ প্রচলিত আছে, যা আজও প্রচলিত সময়ের বিচারে তা বর্তমানে কতটা প্রযোজ্য বিষয়গুলো, সেই নতুন গড়ে ওঠা মনের বিচারে আলোচনা সমালোচনার মাধ্যমে গ্রহন এবং বর্জন করতে হবে।
ঠিক এই কাজগুলোয় করে গেছেন আমাদের মহান ব্যক্তিত্ব সকলেই তাঁদের সময়ে।
আমরা বলে থাকি -আমরা তাঁদের অনুসরণ করে থাকি। কিন্তু না আমরা আসলে তাঁদের অনুসরণ করি না। শুধু আমরা সাধারণরা'ই নই যারা বিভিন্ন মতবাদের চর্চা করেন তারাও। খুব খেয়াল করে দেখবো আমরা - তাঁরা কোনও না কোনও মতবাদের পক্ষের । যতক্ষণ আমরা কোনও না কোনও পক্ষের ততক্ষণ স্বাভাবিকভাবেই নিরপেক্ষ নয়।
আর নিরপেক্ষ না হলে ব্যক্তি কথাটা হাস্যকর মাত্র, ব্যক্তি চিন্তা আরো বড় উপহাস!
কিন্তু দেখবেন মার্ক্স একজন ব্যক্তি যাঁর ব্যক্তিত্ব আছে, মহম্মদ একজন ব্যক্তি যাঁর ব্যক্তিত্ব আছে, যিশু, কনফুসিয়াস, লালন, কবির এঁরা ব্যক্তি যাঁদের আপন আপন ব্যক্তিত্ব আছে। কিন্তু কথিত তাঁদের অনুসারীদের ব্যক্তিত্ব নেই।
আসলে যারা মনে করে তারা একেকজনের অনুসারী তাদের বড়জোর বলা যায় অনুকরণের চেষ্টাকারী।
কারণ অনুসরণ মানে কপি নয়, অনুসরণ  মানে তারা যেমন ঘাত প্রতিঘাতের মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন, ধরণের রকমফেরে স্থান-কাল-পাত্রের বদলে তেমন উন্নতস্থানে নিজেকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হলো- অনুসরণ করা।
কিন্তু আমরা প্রায়ই অন্ধভাবে কারো না অন্ধ অনুগামী।
মার্ক্সবাদের চিন্তা করে এমনরাও মনের অজান্তে প্রচণ্ড অন্ধত্বে জর্জরিত! যা বেশী ভাবায়।
ব্যক্তি হলো তাই যা  এক এবং একক, যার আর দুই নেই। তখনই তা হয় একজনের সত্ত্বা এবং তিনিই একজন মানুষ ।
অন্ধ আস্তিকদের মতো অন্ধ বিজ্ঞানমনাও খুব এ্যাভেলেবল, এদের দুইয়ে কোনো তফাৎ তেমন নেই।
বস্তু বস্তু করে বটে কিন্তু বস্তুর ধারণা খুব কমজন ব্যাখ্যা করতে পারেন, ঠিক যেমন আস্তিরা ঈশ্বর ঈশ্ৃর করে কিন্তু বোঝাতে বড়ই অক্ষম। আমরা যখন এক একক হতে পারবো তখনই অনেক সমস্যার সমাধান পাবো, তার আগে নয়। মুক্ত হওয়া ছাড়া কিছুই উদ্ঘাটন সম্ভব নয়। আমরা যতক্ষণ কোনো কিছুতে আবদ্ধ ততক্ষণ মুক্ত চিন্তার অধীকারি নই, আর ধার্মীকও নই। কারণ ধার্মিক তিনিই  যিনি এক এবং  একক। বাকী সবই অনুসরণকারীও না, অন্ধ অনুকরণের চেষ্টাকারী বা ইচ্ছা পোষণকারী।
(আরো আলোচনা দরকার, বাকীগুলো আপাতত বাকী থাক)
               ।। 17,12,16/Dhulian ।।